যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ও মিশর-কাতারের মধ্যস্থতায় ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির সব সম্ভাবনাই ভেস্তে গেছে। মূলত প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর গোঁড়ামিতেই এমনটা ঘটেছে।
এমন প্রেক্ষিতে স্থানীয় সময় সোমবার সকালে ইসরাইলি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা একটি বিস্ফোরক সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং তা অনুমোদনও দিয়েছে। তা হলো- গাজা উপত্যকার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ ও সেখানে অনির্দিষ্ট সময় ধরে অবস্থান করার পরিকল্পনা।
বার্তা সংস্থা এপি’র তথ্য অনুযায়ী, ইসরাইলি মন্ত্রিসভা এই সিদ্ধান্ত নেয় সোমবার সকালে। আর এর পরই ইসরাইলি সেনাপ্রধান গাজায় নতুন করে ১০ হাজার রিজার্ভ সেনা মোতায়েনের খবর জানিয়ে দেন।
দখলদার ইসরাইলের এমন পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো-
ইসরাইলি কর্মকর্তারা আরও জানান, এই পরিকল্পনার আওতায় গাজা উপত্যকার একটি বড় অংশ দখল করে সেখানে সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখা হবে। পাশাপাশি, হামাসের নিয়ন্ত্রণে থাকা মানবিক সাহায্য সরবরাহও প্রতিহত করা হবে।
মানবিক বিপর্যয় আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা
এদিকে গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ার আগেই গত ২ মার্চ থেকে ইসরাইল গাজায় খাদ্য, জ্বালানি ও পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে ১৯ মাসের আগ্রাসনের মধ্যে দুই মাসের অবরোধই গাজায় সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকটের রূপ নেয়।
এছাড়া ইসরাইল ইতোমধ্যেই গাজার প্রায় ৫০ শতাংশ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
‘স্থানান্তর পরিকল্পনা’ ও বিতর্ক
ইসরাইলের একজন একটি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এপি’কে জানান, ইসরাইল এই পরিকল্পনাকে ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করবে।
আরেকটি বিতর্কিত দিক হলো—মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি পরিকল্পনার ভিত্তিতে গাজার জনসংখ্যাকে কথিত অন্যত্র ‘স্বেচ্ছায় স্থানান্তরের’ কথাও আলোচিত হচ্ছে। তবে ইউরোপ ও আরব বিশ্বের অনেক দেশ এই প্রস্তাবের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।
আলোচনার অচলাবস্থা
ইসরাইল জোর দিয়ে বলছে, হামাস পুরোপুরি পরাজিত না হওয়া পর্যন্ত সামরিক অভিযান বন্ধ হবে না। অন্যদিকে হামাস বলছে—তারা যুদ্ধ বন্ধের একটি স্থায়ী সমাধান ছাড়া কোনো চুক্তিতে রাজি নয়। যার ফলে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের প্রচেষ্টা এখনো ফলপ্রসূ হয়নি।