যুক্তরাজ্য

১ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১১
আরও খবর

যুক্তরাজ্যে নিখোঁজ ৫০ এর বেশি এসাইলাম প্রার্থী শিশু

12477_newFile-1.jpg

যুক্তরাজ্যে আগমনের পর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে থাকা অবস্থায় নিখোঁজ হওয়া ৫০-টির বেশি আশ্রয়প্রার্থী শিশুর কোনো হদিস এখনো পাওয়া যায়নি। দ্য গার্ডিয়ানের হাতে থাকা স্থানীয় কাউন্সিলের তথ্য থেকে জানা গেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কান্ট কাউন্টি কাউন্সিল (কেসিসি) এলাকার বিভিন্ন হোটেল ও রিসেপশন সেন্টার থেকে মোট ৩৪৫ জন শিশু নিখোঁজ হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৬ জন আজও ফিরেনি।

অনেক শিশুই ছোট নৌকা কিংবা লরির ভেতরে লুকিয়ে যুক্তরাজ্যে পৌঁছায় বলে ধারণা করা হয়। বিশেষ করে কেন্ট অঞ্চলটি এই পথের অন্যতম গন্তব্য হওয়ায় সেখান থেকে শিশু নিখোঁজের হার বেশি। আশঙ্কা করা হচ্ছে, নিখোঁজ অধিকাংশ শিশুকে মানব পাচারকারীরা নিয়ে গেছে।

২০২১ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত হোম অফিসের পরিচালিত কেন্টের দুই শিশুবিষয়ক হোটেল থেকে নিখোঁজ হয়েছে ১৩২ জন। তাদের মধ্যে ১০৮ জনকে উদ্ধার করা হলেও এখনও ২৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ২০২০ থেকে ২০২৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত কাউন্সিলের রিসেপশন সেন্টার থেকে নিখোঁজ হয় ২১৩ জন, যাদের মধ্যে ৩২ জনের হদিস পাওয়া যায়নি।

নিখোঁজ শিশুদের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক আলবেনিয়ান। হোটেলগুলো থেকে নিখোঁজদের অর্ধেক—৬৮ জন—এবং রিসেপশন সেন্টার থেকে নিখোঁজ ৬৫ জনই এই দেশের। এরপর আফগান ও ইরানি শিশুরা তালিকায় রয়েছে।

ইসলিংটন ল’ সেন্টারের মাইগ্র্যান্ট অ্যান্ড রিফিউজি চিলড্রেনস লিগ্যাল ইউনিটের এসমে ম্যাডিল এ ঘটনাকে “ভয়াবহ” বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, প্রত্যেক সংখ্যার পেছনে রয়েছে একটি শিশুর মানসিক-শারীরিক নির্যাতনের নির্মম গল্প। যুক্তরাজ্যে নিখোঁজ থাকার সময় তারা মানব পাচার, শারীরিক ও যৌন নির্যাতনসহ ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার হয় এবং এর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব থাকে।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে এক উচ্চ আদালতের রায়ে শিশুদের হোটেলে আশ্রয় দেওয়ার প্রচলিত পদ্ধতি অবৈধ ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে কেসিসি রিসেপশন সেন্টারের সংখ্যা বাড়ায়। তবে আদালতের আদেশের পরও নতুন করে ৪৪ জন শিশু নিখোঁজ হয়েছে এবং তাদের মধ্যে ১০ জনের এখনও সন্ধান পাওয়া যায়নি।

‘এভরি চাইল্ড প্রোটেক্টেড অ্যাগেইনস্ট ট্র্যাফিকিং ইউকে’–এর প্রধান নির্বাহী প্যাট্রিশিয়া ডার জানান, কোনো শিশু নিখোঁজ হওয়া মানেই তার শোষণের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যাওয়া। পরিবারের সঙ্গ বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা এসব শিশু পাচারকারী চক্রের টার্গেটে থাকে।

কেন্ট কাউন্টি কাউন্সিলের একজন মুখপাত্র বলেন, যেকোনো শিশুর নিখোঁজ হওয়া গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। তারা পুলিশ, হোম অফিসসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে ঝুঁকি কমানোর চেষ্টা করছে। তবে সব প্রচেষ্টা সত্ত্বেও শতভাগ প্রতিরোধ করা কঠিন।

একই বিষয়ে হোম অফিস জানায়, নিখোঁজ শিশুদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা সরকারের অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে। তদন্তে সহায়তার লক্ষ্যে নিয়মিত তথ্য ভাগাভাগি করা হচ্ছে এবং অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।

সর্বাধিক পঠিত


আরও খবর
ভিডিও