
যুক্তরাজ্যে আগমনের পর ধারাবাহিকভাবে ১৯টি অপরাধ করলেও মানবাধিকার ভিত্তিতে দেশে থাকার অনুমতি পেয়েছেন মিশরের ২৪ বছর বয়সী এক যুবক। আদালতের রায়ে তার পরিচয় প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় তিনি বেনামেই থাকছেন।
২০১৬ সালে ব্রিটেনে আগত ওই ব্যক্তি ডাকাতি, চুরিসহ আক্রমণাত্মক অস্ত্র রাখার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন। মাদক সংক্রান্ত অপরাধ এবং জরুরি সেবাদাতার ওপর হামলার দায়েও তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
আদালতে তিনি দাবি করেন, তার বাবা নিষিদ্ধ ঘোষিত মুসলিম ব্রাদারহুড সংগঠনের সদস্য হওয়ায় মিশরে ফিরে গেলে তিনি ঝুঁকির সম্মুখীন হবেন। তার প্রত্যাবর্তন ইউরোপিয়ান কনভেনশন অন হিউম্যান রাইটস (ইসিএইচআর) লঙ্ঘন করবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। মানসিকস্বাস্থ্য সংক্রান্ত ব্যক্তিগত তথ্য রক্ষার স্বার্থে তার নাম প্রকাশ করা হয়নি।
ইসিএইচআর দীর্ঘদিন ধরে ব্রিটিশ রাজনীতিতে বিতর্কিত। সমালোচকদের অভিযোগ, এই কনভেনশন যুক্তরাজ্যের সার্বভৌম সিদ্ধান্ত, জাতীয় নিরাপত্তা ও অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে বাধা সৃষ্টি করে।
বিষয়টি নিয়ে টোরি পার্টির শ্যাডো হোম সেক্রেটারি ক্রিস ফিলিপ দ্য সান পত্রিকাকে বলেন, “এ ধরনের বিপজ্জনক অপরাধীকে অবিলম্বে বহিষ্কার করা উচিত। কেন তার অধিকার ব্রিটিশ নাগরিকদের নিরাপত্তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হবে?”
গত মাসে কনজারভেটিভ পার্টি সম্মেলনে দলটির আনুষ্ঠানিক নীতি হিসেবে ইসিএইচআর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি গৃহীত হয়। শ্যাডো অ্যাটর্নি জেনারেল লর্ড উলফসনের পর্যালোচনায় বলা হয়, কনভেনশনে থাকার ফলে ভবিষ্যৎ নীতিনির্ধারণ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। সংস্কারপন্থী দল রিফর্ম ইউকে-ও শুরু থেকেই কনভেনশন ত্যাগের পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়ে আসছে।
অভিবাসনবিরোধীরা অভিযোগ করেন, ইসিএইচআরের বিশেষ করে “আর্টিকেল–৮”, অর্থাৎ ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনের অধিকার—বিদেশি অপরাধীদের বহিষ্কার ঠেকাতে বারবার ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ দুর্বল হয়ে পড়ছে বলে তাদের দাবি।
তবে কনভেনশনের সমর্থকরা বলেন, এটি ন্যায্য বিচারের অধিকার, নির্যাতন থেকে সুরক্ষা এবং আইনশাসনের প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করে; একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুক্তরাজ্যের অবস্থানকে শক্তিশালী করে।