যুক্তরাষ্ট্রে মসজিদের বাইরে গুলিতে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। দেশটির পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের আপার ডার্বির মসজিদ আল মদিনার সামনে ছিনতাইকারীর গুলিতে খুন হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক মাহবুব রহমান (৬৫)।
সিবিএস ফিলাডেলফিয়ার খবরে বলা হয়েছে, রোববার সংঘটিত ঘটনার পর দিন সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ বিভাগ পলাতক সন্দেহভাজন খুনির ছবি প্রকাশ করেছে।
খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় রোববার রাতে এশার নামাজ আদায় করতে আপার ডার্বির মসজিদ আল মদিনায় যান মাহবুব। ৭টা ৪৫ মিনিটের দিকে পার্কিং লটে তাকে গুলি করে এক দুর্বৃত্ত। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এ সময় মসজিদে দেড় শতাধিক মুসল্লি ছিলেন।
আপার ডার্বি পুলিশ বিভাগ সংবাদ সম্মেলনে জানায়, সাউথ ৬৯ ও ওয়ালনাট স্ট্রিটে অবস্থিত মসজিদ আল-মদিনা আপার ডার্বি ইসলামিক সেন্টারের পার্কিং লটে সংঘটিত হত্যাকান্ড কোনো হেট ক্রাইম বা বিদ্বেষপ্রসূত হত্যাকান্ড নয়, টার্গেট হত্যাও নয়। গাড়ি ছিনতাই করতে এক দুর্বৃত্ত এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।
আপার ডার্বি পুলিশ মামলায় আগ্রহী একজন ব্যক্তির সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করেছে। গোয়েন্দারা এই সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে পরনের পোশাক দেখে দ্রুত শনাক্ত করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন। ওয়েস্ট ফিলাডেলফিয়ার ওয়েবস্টার ও সাউথ সিসিল স্ট্রিট থেকে পুলিশ নিহত মাহবুবের গাড়িটি উদ্ধার করেছে।
আপার ডার্বি পুলিশ ডিপার্টমেন্টের সুপারিনটেনডেন্ট টিমোথি বার্নহার্ড বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি এর জন্য দায়ী সে একজন কাপুরুষ, প্রতিটি সম্ভাব্য শব্দে একজন কাপুরুষ যাকে আপনি কাপুরুষ বলে বর্ণনা করতে পারেন। রহমানকে গুলি না করেই সে গাড়ি ছিনতাই করে পালিয়ে যেতে পারত, কিন্তু সে তা করেনি। তাকে হত্যা করে পালিয়েছে সে।’
আপার ডার্বি ইসলামিক সেন্টারের সভাপতি জিয়াউর রহমান বলেন, ‘গুলির শব্দ শুনে আমরা মসজিদ থেকে বের হই। এভাবে মাহবুব মারা যাবেন, কল্পনাও করিনি। তিনি ট্যাক্সি ক্যাব চালাতেন।’
নিহত মাহবুবের বড় ছেলে আতিক আবদুর রহমান বলেন, পুলিশ এখনো সন্দেহভাজন খুনিকে ধরতে পারেনি। মঙ্গলবার আমরা লাশ ফেরত পেয়েছি। জানাজা শেষে ওই মসজিদের পাশের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
জানা গেছে, নিহত মাহবুব রহমানের বাড়ি বাংলাদেশের নড়াইলে। তিনি ১৯৯৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। ফিলাডেলফিয়া মুসলিম উম্মাহ অব নর্থ আমেরিকার (মুনা) সাবেক সভাপতি ছিলেন তিনি। পারিবারিক জীবনে তার স্ত্রী, তিন ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। ২০১৫ সালে তার আরেক মেয়ে মারা গেছে।