সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি খবর রটেছে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের বোন ফাতিমা তাসনিম কানাডায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে চাকরি পেয়েছেন’।
এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার সঙ্গে কথা বলেছেন ফাতিমা তাসনিম।
সংবাদমাধ্যমটিকে তিনি বলেন, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাইকমিশনে চাকরির যে খবর রটেছে তা ভুয়া। নাহিদ আমার ভাই না। মূলত, আমি পটুয়াখালী-৪ আসন থেকে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। তাই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে আমাকে হেনস্তা করার জন্য এটা করে থাকতে পারে।
উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের একান্ত সহকারী মুনতাসির মাহমুদও বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ফাতিমা তাসনিম নামে নাহিদ ইসলামের কোনো বোন নেই। শুধু তাই নয়, স্যারের কোনো বোন নেই। তবে তার ভাই আছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, ফাতিমা তাসনিমের সঙ্গে তার তেমন যোগাযোগ নেই, তবে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বোন হিসেবে তিনি আমাদের অনেক হেল্প করেছেন।
এর আগে গত জুলাইয়ে ফাতিমা একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে নিজেকে নাহিদের বোন পরিচয় দেন। এ বিষয়ে ফাতিমা জানান, নাহিদ ইসলাম তার ভাই নন, পরিস্থিতির কারণে তখন নিজেকে তার বোন হিসেবে গণমাধ্যমে পরিচয় দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, আমি যখন গণঅধিকার পরিষদের সদস্য ছিলাম তখন নাহিদ ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা ছিলেন। সে আমাকে বোন হিসেবে শ্রদ্ধা করে, আমি তাকে ভাই হিসেবে শ্রদ্ধা করি।
ফাতিমা আরও বলেন, ২১ জুলাই গুম থেকে নাহিদ ফিরে আসার পর তার সঠিক সময় চিকিৎসা শুরু না হলে তার প্রাণের শঙ্কা ছিল। তখন আমি গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে ছিলাম (যেখান থেকে নাহিদকে তুলে নেয় ডিবি পুলিশ)। দেশের ওই সময়কার পরিস্থিতিতে হাসপাতাল রোগীর ব্যাকগ্রাউন্ড ছাড়া ভর্তি নিচ্ছিল না। আমি যেহেতু প্রয়াত ডা. জাফরুল্লাহ স্যারের (গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে ট্রাস্টি ছিলেন) সাথে দীর্ঘদিন কাজ করেছি, সেই হিসেবে হাসপাতালে চিকিৎসক থেকে নার্সরা আমাকে চিনতেন। তাই আমি নাহিদের লিগ্যাল গার্ডিয়ান বোন পরিচয় দিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি। তখন সঙ্গে তার স্ত্রী থাকলেও তিনি কিছুটা অসুস্থ ও আতঙ্কে ছিলেন। তাছাড়া আমি তার বোন পরিচয় না দিলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি নিতে চাচ্ছিল না।
এদিকে খবরটি যাচাই করে রিউমার স্ক্যানার বলেছে, বিডিপ্যানারোমা নামের সাইটটিতে বর্তমানে মাত্র চারটি নিউজ রয়েছে। এর একটি ফাতিমা তাসনিমকে নিয়ে। ফাতিমা তাসনিম গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য। তাকে উপদেষ্টা নাহিদের বোন বলে দাবি করা হলেও আদতে তাদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই।
রিউমার স্ক্যানার আরও বলেছে, ফাতিমা কানাডার বাংলাদেশ মিশনে চাকরিও পাননি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এমন কোনো বিজ্ঞপ্তি দেয়নি।
ফাতিমা রিউমার স্ক্যানারকে বলেছেন, এটা পুরোটাই একটা ভুয়া নিউজ। এর সঙ্গে বাস্তবের কোনো সত্যতা নেই। তা ছাড়া আমি এই ইউনিভার্সিটি (জগন্নাথ) থেকে পড়াশোনা করিনি। সবকিছুই অসত্য ও মিথ্যা।